পৃথিবীর আকাশে নতুন রহস্য—আবির্ভাব ঘটেছে ‘কোয়াসি চাঁদের’


মহাবিশ্ব যেন প্রতিনিয়তই নতুন নতুন বিস্ময়ে আমাদের ডেকে নিয়ে যাচ্ছে। এবার বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন পৃথিবীর চারপাশে ভাসমান এক অদ্ভুত সঙ্গী—একটি কোয়াসি চাঁদ। নাম রাখা হয়েছে ‘২০২৫ পিএন৭’। তবে এটি আমাদের পরিচিত চাঁদের মতো নয়। প্ল্যানেটারি সোসাইটির তথ্যমতে, কোয়াসি চাঁদ আসলে একটি ক্ষুদ্র গ্রহাণু, যা সরাসরি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না। বরং সূর্যের চারপাশে এমনভাবে ঘোরে যে দূর থেকে মনে হয়, এটি যেন পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেছে—একেবারে ছায়ার মতো।

এই রহস্যময় মহাজাগতিক খণ্ডটির ব্যাস প্রায় ১৯ মিটার বা ৬২ ফুট। আকারে ছোট হলেও এর উপস্থিতি একেবারেই অগ্রাহ্য করার মতো নয়। সাধারণ টেলিস্কোপ দিয়ে দেখা যায় না, শুধুমাত্র উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপই ধরতে পারে এর ক্ষীণ আলো। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই কোয়াসি চাঁদ পৃথিবী থেকে প্রায় ২৮ লাখ থেকে ৩৭ লাখ মাইল দূরে অবস্থান করছে এবং সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর মতোই কক্ষপথ অনুসরণ করছে। ফলে মনে হয় এটি আমাদের গ্রহের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী।

স্পেনের মাদ্রিদের কমপ্লুটেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী কার্লোস দে লা ফুয়েন্তে মার্কোস জানিয়েছেন, ২০২৫ পিএন৭ পৃথিবীর পরিচিত সাতটি কোয়াসি চাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট এবং সবচেয়ে কম স্থিতিশীল। সীমিত দৃশ্যমানতার কারণে এটি প্রায় ছয় দশক ধরেই অদৃশ্য থেকে গিয়েছিল বিজ্ঞানীদের চোখে। অনুমান করা হচ্ছে, আরও অন্তত ৬০ বছর এটি পৃথিবীর সঙ্গী হয়ে থাকবে।

এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের ফলাফল সম্প্রতি আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির রিসার্চ নোটস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। মহাকাশপ্রেমীরা বলছেন, ২০২৫ পিএন৭ যেন আমাদের গ্রহকে ছায়ার মতো অনুসরণ করা এক রহস্যময় ছদ্মচাঁদ—যার প্রতিটি গতিবিধি আমাদের মনে করিয়ে দেয় মহাবিশ্ব এখনো অগণিত গোপন রহস্য বুকে লুকিয়ে রেখেছে।

সূত্র: বিটনেক। ছবি: প্রতীকী।

মন্তব্য

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال