২১ মে, ২০২৩ এ রাইয়ানাহ বারনাওয়ি এক নতুন অধ্যায় শুরু করেন যখন তিনি মহাশূন্যে যাত্রা করেন। তিনি কেবলমাত্র সৌদি আরবের প্রথম নারী মহাকাশচারীই নন বরং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) পৌঁছানো প্রথম আরব নারীর সম্মান অর্জন করেন।
রায়নাহ বার্নাউই ১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের জেদ্দায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন জৈবচিকিৎসা গবেষক যিনি প্রায় এক দশক ধরে ক্যান্সার স্টেম-সেল গবেষণা নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জৈবচিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি এবং সৌদি আরবের আলফাইসাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। রিয়াদে কিং ফয়সাল স্পেশালিস্ট হাসপাতাল এবং গবেষণা কেন্দ্রের স্টেম সেল এবং টিস্যু পুনঃপ্রকৌশল প্রোগ্রামে গবেষণা ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে তার নয় বছরের অভিজ্ঞতা তাকে এই মিশনের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত করে।
তিনি ২০২৩ সালের ২১ মে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেটে ক্রু ড্রাগন ফ্রিডম নভোযানে মহাকাশে যাত্রা করেন।
মহাকাশে থাকাকালীন, রায়না স্টেম সেল এবং স্তন ক্যান্সার সম্পর্কিত গবেষণায় মনোনিবেশ করেছিলেন। তার গবেষণায় মানব প্রতিরোধ কোষের প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া এবং মাইক্রোগ্রাভিটি পরিস্থিতিতে mRNA পরিবর্তনগুলি তদন্ত করা হয়েছিল। এছাড়াও, তিনি একটি ক্লাউড সিডিং পরীক্ষা পরিচালনা করেছিলেন, যা সম্ভাব্য চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপনের জন্য কৃত্রিম বৃষ্টিপাত তৈরির সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করে। এই পরীক্ষাগুলি চিকিৎসা বিজ্ঞানে যুগান্তকারী অগ্রগতির পথ প্রশস্ত করার সম্ভাবনা রাখে।
আরব নারীদের জন্য এটি একটি শক্তিশালী বার্তা। বিশেষত, সৌদি আরবে তারা গাড়ি চালানোর অনুমতি পাওয়ার মাত্র কয়েক বছর আগে পর্যন্ত উল্লেখযোগ্যভাবে বঞ্চিত ছিল।
পৃথিবীতে ফিরে এসে, রাইয়ানাহ সৌদি স্পেস এজেন্সির সাথে “বায়োগ্র্যাভিটি” নামে একটি উদ্যোগ চালু করেন। এটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম মাইক্রোগ্র্যাভিটি গবেষণার কমিউনিটি অফ প্র্যাকটিস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সৌদি আরবে মহাকাশ জৈববিজ্ঞান গবেষণার সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে।
তিনি আরেকটি কারণে উদীয়মান প্রজন্মের রোল মডেলও। “বিশ্বের মানুষের প্রতি আমার বার্তা হলো, ভবিষ্যৎ সুদূরপ্রসারী। বড় স্বপ্ন দেখ এবং নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো,” তিনি বলেন। মহাকাশে থাকাকালীন তিনি শিশুদের সঙ্গে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন এবং বিজ্ঞান ও অনুসন্ধানের প্রতি তাদের আগ্রহ সঞ্চার করেন।
রাইয়ানাহ বারনাওয়ির এই যুগান্তকারী যাত্রা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করা সম্ভব এবং স্বপ্নের পেছনে ছুটলে আকাশকেও স্পর্শ করা যায়।
- ছবি: সংগ্রীহীত
Tags
দিগন্ত আলাপ