তার জন্য সে পায়নি কোন সম্মান
বরঞ্চ লোকে তাকে লখাই বলে ডাকতো
কেউ কেউ আবার আদর (?) করে বলত লখে,
তাতেই সে খুশি থাকতো
হাসির রেশ লেগে থাকতো মুখে।
অথচ.......
আমরা দাঁড়িয়ে আছি কল্পলোকের
আঁকাট পুকুরের শাপলা শালুক ফোঁটা স্বল্প জলে,
ঠিক ঐ ফেসবুকের বন্ধুদের মতন
পাঁচ হাজার বন্ধু পার হয়ে গেছে
ফলোয়ার পাবার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি।
অথচ পাড়ার ছ’জনের নাম মনে রাখতে পারি না,
অচেনা মানুষকে দেখে মিষ্টি হাসি
যেন কত জনমের চেনা কতো না আপন,
আপনজনদের সাথে সময় নেই কথা বলার,
নিদেন মিসকল করার সময়ও পাই না।
সূর্যের আলো ফোটার আগেই ম্যাসেঞ্জারে
এক রাশ বন্ধুদের এক আকাশ শুভেচ্ছা পাঠিয়ে দিই।
সকালে একান্ত পরিচিত জনের পাঠানো
দই-মাছ-মিষ্টি ও নীলকণ্ঠ পাখির ছবি দেখে যাত্রা বেঁধেছি..
বিসর্জনের চেনা ঢাকের আওয়াজ পাচ্ছি,
খুঁজছি কোন জামাটা ম্যাচ করে প্যান্টের সাথে পরবো,
না পাঞ্জাবি পায়জামা পরে অপরাজিতা আনতে ঘাটে যাবো?
মন্তব্য: কবি দয়াময় মাজির এই কবিতাটি একটি শক্তিশালী বৈপরীত্য (Contradiction) তৈরি করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে গেছে। একদিকে রয়েছে লক্ষ্মীকান্ত ঢাকি, যে তার ঢাকের আওয়াজকে জীবিকা ও জীবনের অংশ করে নিয়েছে—সে সামান্য সম্বোধনেই ('লখাই', 'লখে') খুশি থাকে। অন্যদিকে, কবি তুলে ধরেছেন আধুনিক সমাজের মানুষের অবস্থান—আমরা দাঁড়িয়ে আছি 'কল্পলোকের' এক অগভীর জলে, যেখানে আনন্দের উৎস বাস্তব নয়, বরং ভার্চুয়াল। যেটা অত্যন্ত বাস্তব এবং পাঠকের জন্য একটি অসাধারণ উপহার।
