ফিরতে গাঁয়ে সকাল দুপুর মন করে আনচান।
হেমন্তের ঐ নবীন প্রাতে,
মাথাল মাথায় কাস্তে হাতে ইচ্ছে করে
কাটতে মাঠের সেই সোনালী ধান,
রাখালিয়া বাঁশির সুরে জুড়িয়ে নিতে প্রাণ।
গাঁয়ের পাশেই ছোট্ট নদী অনাদি কাল থেকে,
বিরাম হারা বাঁধনহারা চলছে এঁকেবেঁকে।
দুই ধারে তার চাষির বাড়ি কি মনোহর গাছের সারি,
নয়ন জুড়ায় রসে ভরা গাছপাকা ফল দেখে,
ইচ্ছে হলেই একটুখানি দেখতে পারি চেখে।
নদীর জলে নৌকা চলে রঙিন পালের টানে,
মাঝির গলায় ভাটিয়ালি পরশ জাগায় প্রাণে।
আকাশ জোড়া মেঘের আসর
সাদায় কালোয় প্রেমের বাসর।
কোথায় তারা ঘুমায় রাতে কেউ কি সে সব জানে,
সাগর পাহাড় নদীর চড়ায় কিসের খবর আনে?
শীতের দিনে ক্ষেত জুড়ানো সরষে ফুলের হাসি,
মৌমাছিরা চুম দিয়ে যায় একটু ভালোবাসি,
রাতের বেলায় পানের রসে গল্প কথার আসর বসে।
হুতোম প্যাঁচার কেচ্ছা শোনায় বারুই পাড়ার মাসি,
গুনাই বিবির দুঃখের কথায় চোখের জলে ভাসি।
আজকে সে সব কোথায় যেন হারিয়ে গেছে দূরে,
তালাস করার ইচ্ছে জাগে বুকের অচিন পুরে।
চোখের তারায় সেই বেণুবন খেয়া ঘাটের অরূপ রতন, হারায় যে ধন আর কি মেলে সারা জগৎ ঘুরে?
সেই বেদনায় আমার বাঁশি কাঁদায় করুন সুরে।
