কৃত্রিম মেধা বা এআই গল্প বলার বটগুলো এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে। এগুলো আমাদের নানা কাজে সাহায্য করে, কিন্তু অনেকেই ঠিক বুঝে না এগুলো কীভাবে কাজ করে। যেমন, উন্নত বটগুলোও জুন ২০২৪-এর পরের ঘটনা জানতে হলে ইন্টারনেট ঘাঁটতে হয়। আজ আমরা এআই বটের কাজের পদ্ধতি, এর সীমাবদ্ধতা এবং আমাদের জীবনে এর প্রভাব নিয়ে সরাসরি কথা বলব।
এআই বটগুলো মূলত বড় ভাষা মডেল বা এলএলএম দিয়ে কাজ করে। এগুলো লেখা বোঝার জন্য তৈরি, ঠিক যেমন ছোট বাচ্চারা কথা শুনে শুনে ভাষা শেখে। বাচ্চারা বই পড়ে আর কথা শুনে শেখে, তেমনি এলএলএমগুলোকে ইন্টারনেটের লেখা, বই এবং নানা তথ্য দিয়ে শেখানো হয়।
প্রথমে প্রাক-প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, যেখানে কোটি কোটি শব্দ এবং বাক্য খাওয়ানো হয়। এতে মডেলটি শব্দের মধ্যে সম্পর্ক, ব্যাকরণের নিয়ম এবং সাধারণ জ্ঞান শেখে। যেমন, "সূর্য পূর্ব দিকে" বললে পরের শব্দটা "ওঠে" হবে—এটা অনুমান করতে শেখে।
তারপর ফাইন-টিউনিং করা হয়, যেখানে মডেলটিকে নির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরি করা হয়। মানুষ পর্যালোচকরা মডেলের উত্তরগুলো আরও সঠিক, সহায়ক এবং নিরাপদ করার জন্য নির্দেশনা দেন। এতে মডেলটি বুঝে নেয় কোন ধরনের উত্তর ঠিক আর কোনটা নয়।
আপনি যখন চ্যাটবটকে প্রশ্ন করেন, তখন এটি আপনার কথাগুলো ছোট ছোট টুকরো করে নেয়, যাকে টোকেন বলে। এরপর মডেলটি আগে শেখা সব তথ্য দেখে সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো উত্তরটা বানিয়ে দেয়। মজার ব্যাপার হলো, এই উত্তরগুলো আগে থেকে লেখা থাকে না—প্রতিবার নতুন করে তৈরি হয়।
চ্যাটজিপিটির একটা বড় সীমাবদ্ধতা হলো এর জ্ঞানের একটা শেষ তারিখ আছে। কিছু সংস্করণের জানাশোনা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, আবার কিছুটা ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। মানে এই তারিখের পরে পৃথিবীতে কী ঘটেছে, সেসব সম্পর্কে এর নিজের কোনো ধারণা নেই।
তবে ভালো খবর হলো, নতুন এবং আরো উন্নত সংস্করণগুলো, বিশেষ করে যেগুলো পেমেন্ট করে নিতে হয়, সেগুলো এখন সরাসরি ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিতে পারে। আপনি যদি সাম্প্রতিক কোনো খবর জানতে চান, তাহলে এই চ্যাটবটগুলো বিং সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে রিয়েল টাইমে তথ্য খুঁজে বের করে আপনাকে বলে দেয়। তাই যদি দেখেন চ্যাটজিপিটি ২০২৪ সালের জুনের পরের ঘটনা বলছে, তাহলে বুঝবেন এটি ইন্টারনেট থেকে সেই তথ্য নিয়েছে।
Tags
প্রযুক্তি আলাপ