আপনি তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে। সেই আকাশের বিশাল সমুদ্রের মাঝেই লুকিয়ে আছে আমাদের মিল্কিওয়ের কেন্দ্র। আর সেই কেন্দ্রে রয়েছে এক অবিশ্বাস্য সক্রিয় নক্ষত্র-গঠন অঞ্চল— সাগিটারিয়াস বি২ (Sagittarius B2). এটিকে বলা যায় মহাজাগতিক এক বিশাল কারখানা, যেখানে প্রতি মুহূর্তে জন্ম নিচ্ছে নতুন নক্ষত্র।
কিন্তু এই অঞ্চলটিকে আসল রূপে দেখা মানুষের চোখে সম্ভব নয়। তাই প্রয়োজন উন্নত প্রযুক্তি। আর সেই প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। ওয়েবের দুই প্রধান যন্ত্র—NIRCam ও MIRI—এই রহস্য উন্মোচন করেছে ভিন্ন ভিন্ন আলোয়।
NIRCam যখন নিয়ার-ইনফ্রারেড আলোয় তাকাল, দেখা গেল হাজার হাজার তারার রঙিন ভিড়। যেন অসংখ্য আলোর বিন্দু মিলেমিশে গড়ে তুলেছে এক জ্বলজ্বলে মহাজাগতিক নগরী। অন্যদিকে, MIRI-র মিড-ইনফ্রারেড দৃষ্টিতে ফুটে উঠল ভিন্ন ছবি—তারার ভিড় নয়, বরং গ্যাস ও ধূলিকণার জটিল নকশা, যা নতুন নক্ষত্র গঠনের মূল উপাদান।
এই দুই দৃষ্টিভঙ্গি একসঙ্গে মিলে বিজ্ঞানীদের দিয়েছে এক সম্পূর্ণ চিত্র। তারা এখন আরও কাছ থেকে বুঝতে পারবেন—কেন ছায়াপথের এই কেন্দ্রে নক্ষত্র তৈরির হার এত বেশি, অথচ মিল্কিওয়ের অন্য প্রান্তগুলোতে তা তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
এই আবিষ্কার শুধু সাগিটারিয়াস বি২ নয়, বরং পুরো গ্যালাক্সির রহস্য উন্মোচনের দিকে এক ধাপ এগিয়ে দেবে। কারণ প্রতিটি নতুন নক্ষত্র মানে নতুন গল্প, নতুন মহাজাগতিক ইতিহাস, আর হয়তো একদিন নতুন জীবনের সম্ভাবনা।
Image Credit: NASA
Tags
বিজ্ঞান আলাপ
