রিটেনশন নিয়ে ইউটিউবের আসল খেলা

অনেকেই জানেন যে আগে শর্টস শুধু ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু এখন ইউটিউব সেটা বাড়িয়ে দিয়েছে সর্বোচ্চ ৩ মিনিট পর্যন্ত। তাহলে আসলেই কি ৩ মিনিট বানানো ভালো? ওয়াচটাইম আর রিটেনশন নিয়ে ইউটিউবের আসল খেলা কেমনভাবে কাজ করে? এগুলোই আজকে ভেঙে বলব।

যদি আপনার ভিডিও ১ মিনিট এর মাত্র হয় আর দর্শক পুরোটা দেখে চলে যায়—তাহলে সেই ভিডিওর রিটেনশন দাঁড়াবে প্রায় ১০০%। কিন্তু আরেকটা ভিডিও যদি ১০ মিনিট হয় আর দর্শক ২ মিনিট দেখে চলে যায়, তখন রিটেনশন নামবে অনেক নিচে। ইউটিউব তখন কোন ভিডিওটাকে প্রোমোট করবে বলে মনে করেন? উত্তরটা আপনাদের অবাক করে দেবে।

আগে শর্টস শুধু ৬০ সেকেন্ড ছিল, কিন্তু এখন সর্বোচ্চ ৩ মিনিট পর্যন্ত শর্টস বানানো যাবে। মানে ১ মিনিট থেকে ৩ মিনিটের যেকোনো ভিডিও শর্টস হিসেবে প্রকাশ পাবে। তবে এর মানে এই না যে সবসময় লম্বা বানাতে হবে। অ্যালগরিদম এখনো সবচেয়ে বেশি প্রোমোট করে সেই ভিডিও যেগুলোর এভারেজ ভিউ ডিউরেশন আর রিটেনশন বেশি।

১ মিনিট, ৩ মিনিট বা ৩ ঘন্টা—সবাই লং ভিডিওর ক্যাটাগরিতে পড়বে যদি সেটা শর্টস না হয়। ইউটিউব এখানে আলাদা মেকানিজম ব্যবহার করে। লং ভিডিওতে ওয়াচটাইম খুব গুরুত্বপূর্ণ। জাস্ট ফর এক্সাম্পল, যদি ১০ জন ৫ মিনিটের ভিডিও গড়ে ৩ মিনিট করে দেখে, তাহলে মোট ওয়াচটাইম দাঁড়াবে ৩০ মিনিট। এই ওয়াচটাইম ইউটিউবের চোখে ভ্যালু তৈরি করে।

ধরে নিও, একজন ১ মিনিট দেখলো, আরেকজনও ১ মিনিট দেখলো—তাহলে মোট ওয়াচটাইম হলো ২ মিনিট। ইউটিউব সব ভিউয়ের সময় যোগ করে মোট ওয়াচটাইম হিসাব করে। কিন্তু এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে—ওয়াচটাইম শুধু বেশি হলেই হবে না, রিটেনশনও দরকার।

যদি ভিডিওর মধ্যে কোন অপ্রাসঙ্গিক অংশ থাকে, তখনই দর্শক বের হয়ে আসবে অথবা স্কিপ করবে। এতে এভারেজ ভিউ ডিউরেশন হ্রাস পাবে। ইউটিউব এটাকে ধরে নেবে যে ভিডিও তেমন ইন্টারেস্টিং না। তখন ভিডিও বড় অডিয়েন্সে পৌঁছাবে না। এমনকি সাবস্ক্রাইবার থাকলেও তাদের সবার হোমপেজে সেটা শো করবে না। অর্থাৎ, ইউটিউবের চোখে রিটেনশন মানে ভিডিওর 'এনগেজমেন্ট স্কোর'।

তাহলে ভিডিও কত লম্বা হওয়া উচিত? শর্টসের জন্য ৪৫ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডকে সবচেয়ে আদর্শ দেখা যায়। ৩ মিনিটের শর্টস তৈরি করা যেতে পারে, কিন্তু তখন কনটেন্টে টানটান রাখতে হবে। আর লং ভিডিওতে কমপক্ষে ৬–৮ মিনিট হলে ইউটিউব বিজ্ঞাপন বসাতে পারে, সুতরাং এটারও আলাদা ভ্যালু রয়েছে।

বোনাস টিপস –

হুক দিন প্রথমেই → ৩–৫ সেকেন্ডে চমকপ্রদ তথ্য বা প্রশ্ন রাখুন।

Lupable content → শর্টের শেষে এমনকি ক্লাইম্যাক্স দিন যেন দর্শক আবার দেখতে চায়। এতে ওয়াচটাইম দ্বিগুণ হতে পারে।

স্ট্রাকচার বানান → হুক → মূল তথ্য → শক্তিশালী এন্ডিং।

অ্যালগরিদম সিগন্যাল → CTR (থাম্বনেইল ও টাইটেল), AVP (Average View Percentage), আর ওয়াচটাইম—এই তিনটাই ইউটিউবের প্রধান সিগন্যাল।

কনসিসটেন্সি → সপ্তাহে অন্তত ৩–৪টি শর্টস এবং নিয়মিত লং ভিডিও দিলে চ্যানেল দ্রুত গ্রো করবে।

 আপনাদের ইউটিউব শর্টসের নতুন নিয়ম, ওয়াচটাইম ও রিটেনশন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা হয়েছে। মনে রাখবেন, শুধু বড় বড় ভিডিও করলেই সম্ভব হবে না, ধারণ করে রাখা সবচেয়ে বড় ব্যাপার। তাই স্মার্টভাবে কনটেন্ট তৈরি করুন, অডিয়েন্সকে এন্টারটেইন করুন আর ইউটিউবকে সঠিক সিগন্যাল দিন।

মন্তব্য

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال